ঝড়ের মাঝে একদিন…
Posted October 26, 2008
on:
আমার গ্রামের বাড়ী সুনামগঞ্জ। অনেকে হয়ত সুনামগঞ্জ এলাকাকে “হাসন রাজার” এলাকা হিসাবে চিনেন, কিন্তু সুনামগঞ্জ জেলার আর একটা পরিচিতি আছে আর সেটা হল “হাওর এলাকা”। বন্যা হলে আর কথাই নেই, এর আধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে যায়। হাসন রাজার ওই কাহিনি নিশ্চই শুনেছেন, দল বল নিয়ে নদীর ঘাঠে বসে থাকত, কেন? ওই নদীটা ছিল সব যোগাযোগ মাধ্যম সব ধরনের যাতায়াতের জন্য। ওই এলাকার কেউ বিয়ে করলে নদীটা ছিল একমাএ মাধ্যম আর হাসন রাজার কাজ ছিল নৌকা থামিয়ে নতুন বধুর মুখ দেখা!এই কাহিনি শুনেছিলাম দাদী্র কাছ থেকে, মুখ দেখে ভাল লাগলে হাসন সাহেব কি করতেন, না হয় নাই বললাম…তো যাইহোক, সুনামগঞ্জ নিয়ে কোন কাহিনি শুনলে নদী হাওর আসবেই…
ঢাকায় ২ দিন থেকে অনেক বৃষ্টি হচ্ছে, ঘর থেকে বের হতে পারছিনা, একটা নশটালজিয়া পেয়ে বসল। তখন আমি ৩য় ক্লাস এ পড়ি। বাবা আমাকে সিলেট নিয়ে আসবেন, একটা নৌকা ভাড়া করা হল, ২ জন মাঝি আসলেন, বলা প্রয়োজন, ২ জন মাঝি কিন্তু প্রফেশনাল মাঝি ছিলনা। আমরা যাত্রা শুরু করলাম, আর শুরু হল ঝড়-তুফান!!! সেকি ঝড়! আমি এখন পর্যন্ত এমন ঝড় আর দেখিনি, রাস্তার ঠিক মাঝামাঝি ঝড় শুরু হল, এমন যায়গায় যেখান থেকে কিনারা দেখা যায়না…ঠিক একটু পরেই শুরু হল ঢেউ!!!
আমি “কালিমা” থেকে শুরু করে যত সুরা মুখস্ত করেছিলাম,সব পড়তে লাগলাম।ধরে নিয়েছিলাম আর বাচবনা। আমার বাবার কিছু টেম্পার প্রব্লেম ছিল, ২ মাঝি বাবার বকুনি খেয়ে দিশেহারা হয়ে গেল। আসলে এইরখম সিটুএশন এ কার মাথা ঠিক থাকার কথা না, এক মাঝি দিশেহারা হয়ে যে দিকে ধার টানতেছিল, তার ঠিক উল্টু দিকে টানা শুরু করল, এখন নৌকা আর যাবে কোথায়? নৌকা একযায়গায় দাঁড়িয়ে রইল! বাবা যত জুরে বকুনি দেয় ওরা তত জুরে টানে! এই দৃশ্য দেখে আমি আর হাসি আটকাতে পারলামনা, দিলাম জুরে একটা হাসি, কিন্তু একটু পরেই আমার ২ গালে যে ২ টা শব্দ হইছিল, সেটা ঝড়ের শব্দের চেয়ে ও বড় ছিল! যাইহোক, আল্লার কি রহম হল, একটু পরে বৃষ্টি থেমে গেল! সবাই বিজে একাকার, তারপর কি আর করা, আমরা বাড়ীর দিকে রওয়ানা দিলাম। ওইদিন আর যাওয়া হইনি সিলেটে।
1 | মেহেদী হাসান
March 3, 2010 at 7:20 pm
বৃষ্টি হলে মাঝে মাঝে বজ্রপাত ও হয়। 😛